মংলার খাল-বিল অঞ্চলের পারশে মাছকে প্রায়শই ইলিশের সঙ্গে তুলনা করা হয়, কিন্তু এখানে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।

১. ইলিশের সাথে তুলনা কেন:

• পারশে মাছের শরীরের আকার কিছুটা ইলিশের মতো মসৃণ এবং দোরা (slender) হয়।

• এর চর্বি এবং তেলের পরিমাণ ইলিশের মতোই থাকে, বিশেষ করে বর্ষার পরে।

• মাংসের নরমতা এবং ঝোল তৈরিতে গন্ধ ধরে রাখার ক্ষমতা ইলিশের কাছাকাছি।

২. গন্ধ:

• পারশে মাছের গন্ধ সাধারণত মৃদু এবং প্রাকৃতিক।

• ইলিশের মতো তেল এবং মশলায় রান্না করলে ভিন্ন ধরনের সুগন্ধ বের হয়, কিন্তু কাঁচা অবস্থায় ইলিশের তুলনায় কম মৎস্য-স্বর থাকে।

৩. পুষ্টি উপাদান:

• প্রোটিন: শক্তিশালী প্রোটিনের উৎস, যা শিশুদের হাড় এবং মাংসের বৃদ্ধি, প্রাপ্তবয়স্কদের মাংসপেশী বজায় রাখা এবং বৃদ্ধদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।

• ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: মস্তিষ্কের উন্নয়ন ও হৃদযন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

• ভিটামিন ও খনিজ: ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি থাকে, যা হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী।

• গর্ভবতী নারীদের জন্য: ফোলেট ও ওমেগা-৩ সাপ্লাই করতে সাহায্য করে, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৪. উপযোগিতা বিভিন্ন বয়সের জন্য:

• শিশু: হাড় ও মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।

• প্রাপ্তবয়স্ক: পেশী শক্তি বজায় রাখতে এবং হৃদরোগ ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

• বৃদ্ধ মা-বাবা: হাড়ের শক্তি ও স্মৃতিশক্তি রক্ষায় সহায়ক।

• গর্ভবতী নারী: শিশুর ডেভেলপমেন্ট এবং নিজের পুষ্টি বজায় রাখতে ভালো।

৫. রান্নার ধরন ও স্বাদ:

• রান্নার ধরন: ভাপা, তেল-মশলা দিয়ে ভাজা, ঝোল, কারি—সব ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা যায়।

• স্বাদ: মাংস নরম, হালকা চর্বিযুক্ত এবং সুস্বাদু। ঝোল বা ভাপে রান্না করলে স্বাদ আরও চমৎকার হয়।

সারাংশে, মংলার পারশে মাছ ইলিশের অনুরূপ, তবে কম গন্ধযুক্ত। শিশু থেকে বৃদ্ধ এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ও খনিজে সমৃদ্ধ। রান্নার ক্ষেত্রে এটি বহুপ্রকারে ব্যবহারযোগ্য এবং স্বাদে স্নিগ্ধ ও লোভনীয়।